ইসলাম ধর্মে ফেরেশতা।
1 min readইসলাম ধর্মে ফেরেশতা।
ইসলাম ধর্মে ফেরেশতাদের গুরুত্ব অপরিসীম। ফেরেশতারা আল্লাহর সৃষ্ট এমন এক ধরনের অস্তিত্ব, যাদের কাজ হলো আল্লাহর হুকুম পালন করা। তারা মানুষ নয়, তাদের নিজস্ব কোনো ইচ্ছা নেই, তারা আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকেন এবং আল্লাহর আদেশ ছাড়া কিছুই করেন না।
ফেরেশতারা কারা?
ফেরেশতারা আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি। তাদের উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর নির্দেশ পালন করা এবং তার সৃষ্টিজগতের বিভিন্ন কাজে অবদান রাখা। ইসলামের বিশ্বাস অনুসারে, ফেরেশতারা আল্লাহর কাছ থেকে বিশেষ শক্তি প্রাপ্ত, যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন।
ফেরেশতাদের সৃষ্টির উদ্দেশ্য
আল্লাহ তাদের সৃষ্টি করেছেন নির্দিষ্ট কিছু কাজ সম্পাদনের জন্য। যেমন, ওহি প্রদান, রিজিক বিতরণ, মৃত্যু নিয়ে আসা ইত্যাদি। তারা সৃষ্টির শুরু থেকেই নিরবিচ্ছিন্নভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
ফেরেশতাদের বৈশিষ্ট্য
ফেরেশতারা আকারে বিশাল এবং অসীম ক্ষমতাধারী। তাদের নিরবিচ্ছিন্ন ইবাদত এবং আনুগত্য তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। ফেরেশতারা কখনো ভুল করেন না এবং তারা আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কোনো কাজ করেন না।
ফেরেশতাদের সংখ্যা
ফেরেশতাদের সংখ্যা অসীম। কুরআন ও হাদিসে কেবল কিছু প্রধান ফেরেশতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তবে তাদের সংখ্যা অনেক বেশি, যা আমরা কল্পনা করতে পারি না।
প্রধান ফেরেশতারা
জিবরাঈল (আঃ)
জিবরাঈল (আঃ) হচ্ছেন আল্লাহর ওহির ফেরেশতা। ইসলামের মতে, তিনি নবী মুহাম্মাদ (সা)-এর উপর কুরআন নাজিল করেছেন এবং আল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ বার্তা নিয়ে এসেছেন।
মীকাইল (আঃ)
মীকাইল (আঃ) হচ্ছেন রিজিক ও বৃষ্টির ফেরেশতা। তিনি পৃথিবীর রিজিক বিতরণের দায়িত্ব পালন করেন এবং পৃথিবীর পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করেন।
ইস্রাফিল (আঃ)
ইস্রাফিল (আঃ) কেয়ামতের দিন শিঙ্গা ফুঁকবেন। তার এই কাজ কেয়ামতের সূচনা করবে এবং সমস্ত জীবিতদের পুনরুত্থান ঘটাবে।
মালাকুল মউত (আঃ)
মৃত্যুর সময় মালাকুল মউত (আঃ) মানুষের আত্মা গ্রহণ করেন। ইসলামে বিশ্বাস করা হয়, মৃত্যুর পর ফেরেশতারা মানুষকে নিয়ে যান এবং তার পরবর্তী জীবনের জন্য প্রস্তুত করেন।
কিরামান কাআতিবীন
এরা এমন ফেরেশতা যারা প্রতিটি ব্যক্তির সাথে থাকেন এবং তার ভালো-মন্দ আমল লিপিবদ্ধ করেন। প্রতিটি ব্যক্তির সাথে দুজন ফেরেশতা থাকে যারা তার কাজকর্ম লিখে রাখে।
মুনকার ও নাকির
মুনকার ও নাকির ফেরেশতা মৃত্যুর পর কবরের মধ্যে প্রশ্নোত্তর করেন। তাদের কাজ হলো মৃত ব্যক্তিকে তার জীবন সম্পর্কে প্রশ্ন করা এবং তার উত্তরের ভিত্তিতে তার ভবিষ্যত নির্ধারণ করা।
হাফাজা – রক্ষাকারী ফেরেশতা
প্রত্যেক মানুষের সাথে কিছু ফেরেশতা থাকেন যারা তাকে বিপদ থেকে রক্ষা করেন। এরা হাফাজা নামে পরিচিত এবং আল্লাহর নির্দেশে মানুষকে রক্ষা করেন।
কুরআনে ফেরেশতাদের উল্লেখ
কুরআনে ফেরেশতাদের সম্পর্কে অনেক আয়াত রয়েছে। ফেরেশতারা বিভিন্ন কাজ করেন এবং তারা আল্লাহর হুকুম পালন করেন। তাদের নিয়ে কুরআনে বিস্তৃত আলোচনা আছে যা মুসলমানদের জন্য শিক্ষামূলক।
ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাসের গুরুত্ব
ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ঈমানের ছয়টি স্তম্ভের একটি হলো আল্লাহর ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা। এই বিশ্বাস ইসলামী আকীদার মূল ভিত্তির একটি অংশ।
উপসংহার
ফেরেশতারা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি এবং আল্লাহর হুকুম পালন করেন। ইসলামে ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস রাখা ঈমানের অন্যতম শর্ত, যা প্রত্যেক মুসলমানের পালন করা জরুরি।