জান্নাতের নিয়ামতসমূহ।
1 min readজান্নাতের
জান্নাতের নিয়ামতসমূহ।
মহান আল্লাহ তা’আলা জান্নাত তৈরি করে রেখেছেন তার প্রিয় বান্দাদের জন্য। এই দুনিয়াতে যারা ভালো কাজ করবে, আল্লাহর অনুগত্য করবে তারাই হবে জান্নাতবাসী। মহান আল্লাহ তা’আলা জান্নাতে অসংখ্য নিয়ামত রেখে দিয়েছেন। আল্লাহ তা’আলা জান্নাতে যেসব নিয়ামত রেখেছেন তা কখনো শেষ হবে না। নিচে জান্নাতের নিয়ামতসমূহ আলোচনা করা হলোঃ
জান্নাতের ঘর-বাড়িঃ
জান্নাতের ঘর-বাড়ি দুনিয়ার ঘর-বাড়ি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কোনো শিল্পী তার রং তুলিতে তা আঁকতে পারবে না এবং দুনিয়ার কোন মানুষ তা নির্মাণ করতে পারবেন না।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল জান্নাত কি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে? তিনি বলেন, এর একটি সোনার ইট ও আর একটি রুপার ইট। এর গাঁথুনি হলো সুগন্ধিময় মিশকের। এর কংকরসমূহ হলো মনি-মুক্তার এবং মাটি হলো জাফরানের। যেসকল ব্যক্তিরা এতে প্রবেশ করবে সে অনন্তকাল সুখে থাকবে। দুঃখ-কষ্ট পাবে না কখনো। তাদের কখনো মৃত্যু হবে না। তাদের পোশাক কখনো পুরাতন হবে না। আর তাদের যৌবন কখনো শেষ হবে না। (তিরমিজি হাদিসঃ ২৫২৬)
জান্নাতের সর্বপ্রথম আপ্যায়নঃ
প্রিয় রাসুল (সা.) এর আজাদকৃত গোলাম সাওবান (রা.) বলেন, এক ইহুদী পন্ডিত রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলেন, জান্নাতিদের সর্বপ্রথম আপ্যায়ন কী হবে? তিনি বলেন মাছের কলিজার টুকরা। ওই ব্যক্তি আবার জিজ্ঞাসা করলেন এরপর তাদের সকালের নাস্তা কী হবে? রাসুল (সা.) উত্তরে বললেন, তাদের জন্য জান্নাতের ষাঁড় জবেহ্ করা হবে, যা জান্নাতের আশে-পাশে চরে বেড়াত। সে বলল, এরপর তাদের পানীয় কী হবে? রাসুল (সা.) বললেন, জান্নাতের একটি ঝর্ণার পানি, যার নাম সালসাবিল। তখন সে লোকটি বলল আপনি ঠিক বলেছেন। (সহীহ্ মুসলিম, হাদিসঃ ৬০৯)
জান্নাতিদের আকৃতিঃ
কিয়ামতের দিন হিসাব-নিকশের পর যারা জান্নাতে যাবে তাদের আকৃতি বা দেহকাঠামো হবে একই রকম।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, জান্নাতে সর্বপ্রথম যে দল প্রবেশ করবে তাদের মুখমন্ডল হবে পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জল। তারপর যে দল তাদের অনুগামী হবে তাদের মুখমন্ডল হবে আকাশের সর্বাধিক দীপ্তমান উজ্জল তারকার মতো। তারা কখনো প্রেশাব-পায়খানা করবে না। তাদের থুথু ফেলার প্রয়োজন হবে না। তাদের নাক থেকে শ্লেষ্মারও বের হবে না। তাদের চিরুনী হবে স্বর্ণের তৈরি এবং ঘাম হবে মিশকের ন্যায় সুগন্ধিপূর্ণ। তাদের ধনুচি হবে সুগন্ধময় চন্দন কাঠের। বড় চক্ষু বিশিষ্ট হুর হবেন তাদের স্ত্রী। তাদের সবার দেহের গঠন হবে একই রকম। তাদের দেহের আকৃতি হবে তাদের পিতা আদম (আ.) এর মতো। উচ্চতায় তাদের দেহের দৈর্ঘ্য হবে ৬০ হাত বিশিষ্ট। (বুখরী, হাদিসঃ ৩০৯২)
চক্ষু শীতলকারী নিয়ামতসমূহঃ
মহান আল্লাহ্ তা’আলা জান্নাতিদের জন্য জান্নাতের মধ্যে চক্ষু শীতলকারী নিয়ামতসমূহ রেখে দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেন, আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমন জান্নাত তৈরি করে রেখেছি, যা কোনো চোখ কোনো দিন দেখেনি, কোনো কান কোনো দিন শোনেনি এবং কোন মানব হৃদয় কোনো দিন কল্পনাও করতে পারেনি। তোমরা চাইলে এই আয়াত পাঠ করতে পারো, কোনো প্রাণ জানে না, আমি তদের জন্য শীতলকারী, যা গোপন করে রেখেছি। (বুখারী, হাদিসঃ ৩০১৭)
উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও মহান আল্লাহ্ তা’আলা জন্নাতিদের জন্য জান্নাতে অসংখ্য নিয়ামতসমূহ রেখে দিয়েছেন। সেই সকল নিয়ামতসমূহ জান্নাতিগণ চিরকাল ভোগ করবেন যা কখনো শেষ হবে না।