নফল সালাতের প্রয়োজনীয়তা ও ফজিলত। Best article
1 min readনফল সালাতের প্রয়োজনীয়তা ও ফজিলত।
ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অনেক বেশি। মহান আল্লাহ তা’আলা তার বান্দা/বান্দীদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে ফরজ করেছেন। ফরজ নামাজের পাশাপাশি সুন্নত ও নফল নামাজ ও রয়েছে।
নফল আরবি শব্দ। এর অর্থ কর্তব্যের অতিরিক্ত কাজ, ঐচ্ছিক ও অতিরিক্ত। ইসলামী শরীয়ত প্রবর্তিত বিধান বা বিষয় কে নফল বলা হয়। যে আমল রাসুলাল্লাহ (সাঃ) নিয়মত পাঠ করতেন এবং মাঝে মাঝে ছেড়ে দিতেন তাকে মুস্তাহাব বলে,নফল বা মানদুব বলা হয়। এমন বিধানের ওপর আমল করা প্রশংসনীয় ও সওয়াবের কাজ। নফল নামাজের প্রয়োজনীয়তা ও ফজিলত অপরিসীম। যেমন,
ফরজ নামাজের ঘাটতি পূরণঃ
হাশরের ময়দানে ফরজ সালাতের ঘাটতি পূরণ হবে, নফল সালাত দ্বারা।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলাল্লাহ (সাঃ) বলতে শুনেছি, কিয়ামত দিবসে বান্দার সর্বপ্রথম হিসাব নেওয়া হবে তার সালাতের। যদি তার সালাতের হিসাব সঠিক হয়, তাহলে সে সফল হবে ও নাজাত পাবে। আর যদি সালাত বিনষ্ট হয়ে যায় তাহলে সে বিফল ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যদি ফরজ সালাতে কমতি হয়, তাহলে প্রতিপালক আল্লাহ বলেন, দেখো আমার বান্দা কোন নফল ইবাদত আছে কি না? তখন নফল দিয়ে ফরজ সালাতের ঘাতটি পূরণ করা হবে। (তিরমিজি, হাদিসঃ ৪১৩)
রাসুলাল্লাহ (সাঃ) এর সাথে জান্নাতে থাকার সৌভাগ্যঃ
রাসুলাল্লাহ (সাঃ) এর সঙ্গে জান্নাতে থাকা বড়ই সৌভাগ্য ও মর্যাদার বিষয়। এই ভাগ্যবান সেই হবে যে অধিক পরিমানে নফল নামাজ আদায় করবে।
রবি আ ইবনু কাব (রাঃ) বলেন, একদা আমি রাসুলাল্লাহ সাথে রাতে থাকতাম এবং অজুর পানি সহ অনান্য প্রয়োজনীয় জিনিস এগিয়ে দিতাম। একদিন তিনি আমাকে বললেন, (কল্যাণের কিছু ) চেয়ে নাও । আমি নিবেদন করলাম, আমি জান্নাতে আপনার সাথে থাকতে চায়। তিনি বললেন এ ছাড়া আর কিছু চাও, আমি বললাম এটাই (আমি চাই)। তিনি বললেন তুমি বেশি বেশি সিজদা করো। (মুসলিম হাদিস, আয়াতঃ ৯৮১)
আল্লাহর প্রিয় হওয়ার যোগ্যঃ
নফল নামাজের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর প্রিয়বান্দা হতে পারে।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ করেন, আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোন প্রিয় বান্দার সাথে শত্রুতা করে আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করলাম। আমি যে সব কাজে বান্দার অনুসরণ করেছি এবং যে সব কাজ ফরজ করেছি, তার মাধ্যমে আমার নৈকট্য অনুসন্ধানের চেয়ে আমার কাছে আর কিছুই নেই। বান্দা বিভিন্ন ইবাদতের মাধ্যমে আমাকে সর্বদা নৈকট্য হাছিল করে। এমনকি আমি তাকে ভালোবাসি। আর আমি যখন তাকে ভলোবাসি, তখন আমি তার কান হয়ে যায়, যা দিয়ে তা শ্রবণ করে, চোখ হয়ে যায় যা দিয়ে তা দর্শণ করতে পারে। হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধারণ করে। পা হয়ে যাই, যা দিয়ে চলাফেরা করতে পারে। যদি আমার কাছে মন থেকে কোন প্রাথর্না করে, আমি তাকে দান করে থাকি। যদি আশ্রয় চেয়ে থাকে আমি তাকে আশ্রয় দিয়ে থাকি। (বুখারি, হাদিসঃ ৬৫০২)
ইশরাকের নামাজে অসংখ্য নেকি অর্জনঃ
সূর্য পরিপূর্ণভাবে উদিত হওয়ার পর ইশরাকের নামাজ আদায় করতে হয়। আনাম ইবনে মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলাল্লাহ (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায় করবে এবং সূর্যদয় পযর্ন্ত আল্লাহর জিকিরে বসে থাকবে, অতঃপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, সে একটি পরিপূর্ণ হজ্ব ও ওমরাহর সওয়াব পাবে। (সুনামে তিরমিজি, হাদিসঃ ৫৮৬)
তাহাজ্জুদ নামাজে দোয়া কবুলঃ
মধ্য রাতের পর বা শেষরাতে সুবহে সাদিক পর্যন্ত তাহাজ্জুদ সালাত দুই থেকে আট রাকাত পড়া যায়। তাহাজ্জুদ নামাজের মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার কাছে দোয়া করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
মহানবী (সাঃ) বলেছেন, রমজানের পর সর্বশেষ্ট রোজা হলো আল্লাহর মাস মহরমের মাসের রোজা। নামাজ হলো রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ। আর ফরজ নামাজের পর সর্বশেষ্ট নামাজ হলো রাতের তাহাজ্জুদের নামাজ। (মুসলিম, হাদিসঃ ১১৬৩)
উপরোক্ত বিষয়গুলো ছাড়াও নফল সালাতের অনেক ফজিলত রয়েছে।
আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে বেশি বেশি করে নফল সালাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।