নামাজের ভূমিকা- best article
1 min readনামাজের ভূমিকা
নামাজের ভূমিকা
নামাজ ইসলাম ধর্মের মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইসলাম ধর্মের জন্য নামাজের ভূমিকা অনেক বেশি। নামাজ ইসলামের পাঁচটি পিলারের মধ্যে একটি। নামাজ পড়লে দেহ ও মন দুটি ভালো থাকে। এটি মুসলিমদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নামাজের মৌলিক উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর প্রতি মুসলিমদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। নামাজ মানুষকে বিভিন্ন পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। তাছাড়া আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে ব্যায়াম করে থাকি নামাজ পড়লে সেই ব্যায়াম নামাজের মাধ্যমেই হয়ে যায়। নামাজ বান্দাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপহার যেটা তার বান্দাদেরকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে। সুতরাং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নামাজের ভূমিকা অপরিসীম। নিচে নামাজের ভূমিকা সম্পর্কে দেওয়া হলোঃ
নামাজ দ্বীনের স্তম্ভঃ
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ বা খুঁটি রয়েছে যার মধ্যে নামাজ হলো অন্যতম। নামাজকে দ্বীনের স্তম্ভ বলা হয়েছে। নামাজ যদি ঠিক থাকে দ্বীনও ঠিক থাকবে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন জায়গায় সরাসরি ৮২ বার সালাতের কথা বলেছেন এবং এর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। নামাজ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। আর নিঃসন্দেহে তা বড়ই কঠিন-বিনীতদের জন্যে ছাড়া। ( সুরা বাকারাহ, আয়াত-৪৫)
নামাজ অন্যায় কাজ হতে বিরত রাখেঃ
মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেন, নিশ্চয় নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দাচার থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্বরণ সর্বাধিক বড় বিষয়। আর যা কিছু তোমরা করো তা আল্লাহ খুব ভালো জানেন। (সুরা: আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)
এ আয়াতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, যেহেতু নামাজ মহান আল্লাহ তাআলাকে স্বরণ করিয়ে দেয় এবং নামাজে নিয়মিত গুরুত্বপ্রদানকারী এবং সে জানে যে আল্লাহ তাআলা প্রতিটি বিষয়ে অবগত আছেন, এজন্য নামাজ তাকে নামাজ তাকে কারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।
নামাজ জান্নাতে যাওয়ার বড় মাধ্যমঃ
নামাজের মাধমে বান্দার সাথে তার রবের সম্পর্ক অটুট থাকে। তাছাড়া ইবাদতের বড় মাধ্যম হলো নামাজ, যা নামাজ আদায়কারীকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে। অন্যথায় নামাজ না পড়লে কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে।
হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলার মনোনীত সর্বোত্তম আমল হলো নামাজ (বুখারী ও মুসলিম)।
কিয়ামতের মাঠে মহান আল্লাহ তাআলা নামাজের হিসাব আগে নিবেন এবং যে ব্যক্তি ঠিকভাবে নামাজের হিসাব দিতে পারবে তার জন্য জান্নাতের যাওয়ার পথ সহজ হবে।
নামাজ সামাজিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করেঃ
নামাজ সমাজে দুর্নীতি, অন্যায়, জুলুম ও নির্যাতনসহ সব অনৈতিক কাজ থেকে বিরত রাখে। এতে করে প্রশাসন ও নিরাপত্তাকর্মীদের স্বল্প ব্যবহার সত্ত্বেও সমাজ ব্যবস্থার নিরাপত্তার চাঁদরে আবৃত তাকে। নামাজ সকল অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে বিধায় সমাজে সামাজিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা হয়।
নামাজ সর্ম্পকে কুরআনের কিছু আয়াতঃ
নামাজ আদায় করো, যাকাত দান করো এবং নামাজে অবনত হও তাদের সাথে যারা অবনত হয়। (সুরা আল বাকারা, আয়াতঃ ৪৩)
সমস্ত নামাজের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সাথে দাঁড়াও। (সুরা আল বাকারা, আয়াতঃ ২৮৩)
আমিই আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার ইবাদত করো এবং আমার স্বরনার্থে নামাজ কায়েম করো। (সুরা ত্বহা, আয়াতঃ ১৪)
নামাজ কায়েম করো, যাকাত প্রদান করো এবং রাসূলদের অনুগত্য করো যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও। (সুরা আন নূর, আয়াতঃ ৫৬)
নামাজ সর্ম্পকে কিছু হাদিসঃ
হযরত জাবির রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, বান্দা (আনুহত্য) ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ত্যাগ করা। (সহিহ মুসলিমঃ ৮২)
হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে এক জুমার সালাত থেকে অপর জুমার সালাত এবং এক রমজান মাসের সিয়াম হতে অপর রমজান মাসের রোজা সেসব গুনাহের জন্যে কাফফারা হয় যা এর মধ্যবর্তী সময়ে হয়ে থাকে, যখন কবিরাহ গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা হয়। (সহীহ মুসলিমঃ ২৩৩)
হযরত আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, তোমাদের অভিমত কী? যদি তোমাদের কারও দরজায় একটি পানির নহর থাকে যাতে সে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে তার শরীরে কি কোন ময়লা থাকতে পারে? সাহাবীগণ উত্তরে বললেন, তার শরীরে কোন ময়লা থাকতে পারে না। তখন রাসূল সা. বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের উদাহরণ এরুপই। বিনিময়ে আল্লাহ তাআলা তার অপরাধ মিটিয়ে দেন। (সহীহ বুখারীঃ ৫২৮, সহীহ মুসলিমঃ ৬৬৭)
হযরত আমর ইবনে শুয়াইব রহ. হতে বর্ণিত, তিনি তার পিতা হতে এবং তার পিতা তার দাদা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন, তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে সালাতের জন্য আদেশ কর, যখন তারা সাত বছর বয়সে পৌঁছাবে। আর যখন দশ বছর বয়সে পৌঁছাবে তখন তাদেরকে সালাতের জন্যে প্রহার কর, তাদের সোয়ার স্থান পৃথক করে দাও। (সুনানে আবু দাবুদঃ ৪৯৫)
তাই আসুন, সকলেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি এবং আল্লাহর হুকুম পরিপূর্ণভাবে পালন করি