তাবলিগ জামাত ও বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাস ও সূচনা ।
1 min readতাবলিগ জামাত ও বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাস ও সূচনা ।
তাবলিক জামাত ও বিশ্ব ইজতেমা সর্ম্পকে আমরা সবাই কম-বেশি জানি। ‘তাবলিগ’ শব্দের আভিধানিক অর্থ প্রচার করা, প্রসার করা, ইসলামের দাওয়াত দেওয়া, বয়ান করা, প্রচেষ্টা করা বা পৌঁছানো প্রভৃতি। ইজতেমা’ আরবি শব্দ যার অর্থ সম্মেলন, সভা বা সমাবেশ। বর্তমান বিশ্বে তাবলিক জামাত ও বিশ্ব ইজতেমা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করে। নিচে তাবলিক জামাত ও বিশ্ব ইজতেমার ইতিহাস নিম্নে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করা হল।
তাবলিগ জামাতঃ
বর্তমান বিশ্বে তাবলিগ জামাত ইসলামিক দাওয়াতি কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এটি সমগ্র বিশ্বে সফল ও গ্রহণযোগ্য দাওয়াতি জামাত। তাবলিগ জামাতের সাথিরা প্রতিনিয়ত মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ইসলামের দিকে আহবান করছেন। তারা নিঃস্বার্থভাবে মানুষের কাছে গিয়ে ইসলাম প্রচার করছেন। তাবলিগ জামাত ইসলামের মৌলিক ছয়টি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তাদের দাওয়াতি কার্যক্রম গোটা বিশ্বে পরিচালনা করে থাকেন। এই ছয়টি মৌলিক বিষয় হলোঃ
১. কালেমা, ২. নামাজ, ৩. ইলম ও জিকির, ৪.ইকরামুল মুসলিমীন, ৫.সহিহ নিয়ত বা ইখলাসের নিয়ত, ৬.দাওয়াত ও তাবলিক।
দাওয়াতি তাবলিগের জন্য আজ গোটা বিশ্বের অনেক অমুসলিমরা ইসলামের ছায়াতলে প্রবেশ করেছেন। আল্লাহকে ভুলে যাওয়া মানুষগুলো নতুন করে তার রবকে চিন্তে পেরেছেন। সত্য ও মিথ্যার পথ কোনটি সে সর্ম্পকে সবাই জানতে পেরেছেন।
তাবলিগ জামাতের এই দাওয়াতি কাজের সূচনা করেছিলেন বিংশ শতাব্দীর একজন বিখ্যাত সাধক দারুল উলুম এর কৃতী সন্তান মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি (রহ.)। সর্বপ্রথম ভারতের রাজস্থানের মেওয়াতে ১৯১০ সালে মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি (রহ.) তাবলিগ জামাতের সূচনা করেন। এর পরে ১৯২০ সালে মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি (রহ.) ভারতের তৎকালীন দেওবন্দ মাদ্রাসার সকল সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের সাথে পরামর্শ করে দিল্লির নিজামউদ্দিনে তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম শুরু করেন। মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভি (রহ.) এর মৃত্যুরপর তাবলিগ জামাতের সকল দায়িত্ব অর্পণ করা হয় তার সন্তান মাওলানা ইউসুফ (রহ.)-কে এবং সর্বশেষে তাবলিগ জামাতের এই কার্যক্রম সমগ্র বিশ্বে পরিচালনা করার জন্য শুরা পদ্ধতিতে দশ সদস্যদের একটি দল গঠন করা হয়।
বিশ্ব ইজতেমাঃ
আমরা আগেয় বলেছি ইজতেমা’ আরবি শব্দ যার অর্থ সম্মেলন, সভা বা সমাবেশ। বিশ্ব ইজতেমা হলো সমগ্র বিশ্বের মুসলিমদের একটি মিলন মেলা, বৃহৎ একটি সমাবেশ। আবার এটি তাবলিগ জামাতের সর্ববৃহৎ সমাবেশ। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের টঙ্গীতে প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমা পালন করা হয়ে থাকে। সর্বপ্রথম টঙ্গীর কাকরাইল মসজিদে ১৯৪৬ সালে বিশ্ব সমাবেশ শুরু হয়। এরপর ১৯৪৮ সালে শুরু হয় চট্রগ্রামে। সর্বশেষে ১৯৬৭ সাল থেকে তুরাগ নদীর পূর্ব তীরে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশ, ভারত,পাকিস্তানসহ বিশ্বের ৫০টি এর অধিক দেশ থেকে মুসলিমরা বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করে। বিশ্ব এই সমাবেশটিতে বাংলাদেশসহ দেশের অন্যান্য বড় বড় মুফতি, হাদিস বিশারদ, গণ্য-মান্য ব্যক্তিবর্গরাও অংশ গ্রহণ করে থাকে। ১৯৯৫ সালে সরকার এই বিশ্ব ইজতেমার জন্য স্থায়ীভাবে তুরাগ নদীর পূর্ব তীরে জায়গা বরাদ্দ করে দেয়। এই বছর ও যথা-নিয়মে বিশ্ব ইজেতেমা পালন করা হয়েছে।