মানুষের জীবনে নেক আমল ও খারাপ কাজের প্রভাব। best article
1 min readমানুষের জীবনে নেক আমল ও খারাপ কাজের প্রভাব।
মানুষের জীবন- জীবিকার নিয়ন্ত্রণ শুধুই আল্লাহর হাতে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, তোমার প্রতিপালক যার জন্য ইচ্ছা তার জীবিকা বাড়িয়ে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছা তা সীমিত করেন। নিশ্চয় তিনি তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক পরিজ্ঞাত, সর্বদ্রষ্টা। (সুরাঃ বনি ইসরাঈল, আয়াতঃ ৩০)
মানবজীবনে নেক ও খারাপ কাজের প্রভাবঃ
কোরআন ও হাদিস দ্বারা মানুষের জীবন-জীবিকার পাপ পুণ্যের প্রভাব প্রমানিত। যেমন- পবিত্র কোরআনে ইরশাদ আছে,‘ যদি সেসব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত ও তাকওয়া অবলম্বন করত, তবে আমি তাদের জন্য আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর কল্যাণ উন্মুক্ত করতাম, কিন্তু তারা মিথ্যা মনে করল। তাদের কৃর্তকমের জন্য আমি তাদেরকে পাকড়াও করলাম। (সুরাঃ আরাফ, আয়াতঃ ৯৬)
নেক কাজের সুফল পার্থিব জীবনেও মেলেঃ
নেক কাজের সুফল মানুষ পার্থিব জীবনেও পায়। রাসুলুল্লাহ বলেন, একটি নেকির ক্ষেত্রেও আল্লাহ তা’আলা কোনো মুমিন বান্দার প্রতি অবিচার করবেন না, বরং তিনি এর ফলাফল দুনিয়াতে দান করবেন এবং আখিরাতেও দান করবেন। আর অবিশ্বাসী লোক পার্থিব জগতে আল্লাহর উদ্দেশ্য যে সৎ আমল করে এর প্রতিদান স্বরুপ তিনি তাকে জীবিকা দান করেন। আখিরাতে প্রতিফল দেওয়ার মতো তার কাছে কোন সৎ আমল থাকবে না। (সহীহ মুসলীম, হদিসঃ ৬৯৮২)
নেক কাজের মাধ্যমে জীবনে প্রশান্তি নেমে আসেঃ
সাধারণভাবে নেক আমল মানুষের জীবণ প্রশান্তি আনে। তবে কোরআন ও হাদিসে কিছু আমলের বর্ণনা বিশেষভাবে এসেছে। যেমন-
১. আল্লাহর উপর তাকওয়া অবলম্বন করাঃ
মানুষের জীবন- জীবিকার তাকওয়ার প্রভাব অপরিসীম। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর নির্ভর করে তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহ সব কিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা। (সুরাঃ তালাক, আয়াতঃ ২-৩)
মহানবী (সাঃ) বলেন, ‘তোমরা যদি প্রকৃতভাবেই আল্লাহ তা’আলার ওপর নির্ভরশীল হতে তাহলে পাখিদের যে ভাবে জীবিকা দেওয়া হয় তাহলে সেভাবে তোমাদের জীবিকা দেওয়া হত। (সুনামে তিরমিজি, হাদিসঃ ২৩৪৪)
২. আত্নীয়তার সর্ম্পক রক্ষা করাঃ
রাসুলু্ল্লাহ (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি চায় যে, তার জীবিকা প্রশস্ত হোক এবং আয়ু বৃদ্ধি হোক, সে যেন আত্নীয়তার সর্ম্পক অক্ষুগ্ন রাখে। (সহহি বুখারি, হাদিসঃ ৫৯৮৬)
মুমিনের জন্য হুাঁশিয়ারিঃ
নেক আমলে পার্থিব জীবনে প্রশস্তি আসে। এই বিষয়ে বুজুর্গ আলেমরা দুটি বিষয় স্মরণে রাখার নির্দেশ দেন। যেমনঃ
পৃথিবী মৃত পশুর চেয়ে নিকৃষ্টঃ
দুনিয়া মুমিনদের কাছে নগণ্য। জাবির বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আলিয়া অঞ্চল থেকে মদিনায় আসার পথে এক বাজার দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর উভয় পাশে বেশ কিছু লোকজন ছিলো। যেতে যেতে তিনি ক্ষুদ্র কানবিষ্ট একটি মৃত বকরির বাচ্চার পাশ দিয়ে যেতে তার কাছে গিয়ে এর কান ধরে বললেন, তোমাদের কেউ কি এক দিরহাম দিয়ে এটা ত্রুয় করতে আগ্রহী? তখন উপস্থিত লোকেরা বললেন, কোন কিছুই বদৌলতে আমরা এটা নিতে আগ্রহী নই। এবং এটি নিয়ে আমরা কি করব? তখন নবী কারীম (সাঃ) বললেন, বিনা পয়সায় তোমরা কি সেটা নিতে আগ্রহী তারা বললো, এ যদি জীবিত হতো তবুও তো এটা দোষী। কেননা এর কান হচ্ছে ছোট ছোট। আর এখন তো সেটা মৃত, আমরা কিভাবে তা গ্রহণ করব? অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহর শপথ! এটা তোমাদের কাছে যতটা নগণ্য, আল্লাহর কাছে দুনিয়া এর থেকে আরও বেশি নগণ্য। (সহিহ মুসলীম, হাদিসঃ ৭৩০৮)
দুনিয়ার জীবনের ভোগ-বিলাস মুমিনদের জীবনের লক্ষ্য নয়ঃ
পার্থিব ভোগ-বিলাস মুমিন জীবনে লক্ষ্য হতে পারে না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, কেউ সুখ- সম্ভোগ কামনা করলে আমি যাকে যা ইচ্ছা এখানেই সত্বর দিয়ে থাকি, পরে তার জন্য জাহান্নাম নির্ধারণ করি, সেখানে সে প্রবেশ করবে নিন্দিত ও অনুগ্রহ হতে দূরীকৃত অবস্থায়। (সুরাঃ বনী ইসরাঈল, আয়াতঃ ১৮)
আল্লাহ আমাদেরকে নেক আমল ও উভয় জগতের কল্যাণ দান করুন। আমিন।