যে সকল ব্যক্তিদেরকে আল্লাহ তা’আলা মাফ করবেন।
1 min readযে সকল ব্যক্তিদেরকে আল্লাহ তা’আলা মাফ করবেন।
মহান আল্লাহ তা’আলা অতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু্। তিনি তার বান্দাদেরকে অধিক পরিমানে ভালোবাসেন। কিয়ামত দিবসে মহান আল্লাহ তা’আলা তার অনেক বান্দাদেরকে নিজ অনুগ্রহে মাফ করে দিবেন এবং তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। চলুন তাহলে জেনে নেই কারা সেইসকল সৌভাগ্যবান ব্যক্তিবর্গ।
১. আল্লাহর নিকট আত্নসমর্পণকারী ব্যক্তিঃ
যে ব্যক্তি আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাস করে, তাঁর আদেশ ও নির্দেশ মান্য করে সংশয়মুক্ত হয়ে সন্তুষ্টি ও পূর্ণ আনুগত্যের সঙ্গে। আল্লাহর আদেশ নিষেধের ব্যপারে তার কোন আপত্তি থাকে না। মহান আল্লাহর কাছে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আত্নসমর্পন করে।
২. মুমিন বা বিশ্বাসীঃ
ঈমান মানুষের কাজের মাধ্যমে প্রকাশ পাই। অনুগত সৎজীবন ঈমানের দাবি। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, গ্রাম্য লোকেরা বলে, আমরা ঈমান আনলাম। বলুন, তোমরা ঈমান আনোনি, বরং তোমরা বলো আমরা আত্নসমর্পণ করেছি। ঈমান তোমাদের অন্তরে প্রবেশ করেনি। আর যদি তোমরা আল্লাহ ও তার রসূলের অনুগত্য কর তবে তিনি তোমাদের আমলসমূহের সওয়াব সামান্য পরিমানও লাঘব করবেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দায়ালু। (সুরাঃ হুজরাত, আয়াতঃ ১৪)
৩. আল্লাহর অনুগত বান্দাঃ
অনুগত দ্বারা উদ্দেশ্য আল্লাহর অনুগত্য ও প্রার্থনায় যারা প্রাশান্তি লাভ করে এবং যারা এ ব্যাপারে স্থির ও দৃঢ়চিত্ত। আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবকিছুই আল্লাহরই ও সবকিছুই তাঁর একান্ত অনুগত। (সুরাঃ বাকারা, আয়াতঃ ১১৬)
৪. সত্যবাদিঃ
একজন মুমিন তার জীবনের সব কথা ও কাজে সততার পরিচয় দেবে। তার জীবনে মিথ্যার চর্চার থাকবে না। এমনকি হাসির ছলেও সে মিথ্যা বলে না। সত্যবাদিকে আল্লাহ তা’আলা পছন্দ করেন।
৫. ধৈর্যশীল ব্যক্তিঃ
ধৈর্য মানুষকে অন্তরকে আলোকিত করে এবং আল্লাহর সঙ্গে তার সর্ম্পক দৃঢ় করে। আল্লাহ ধের্যশীল বান্দাকে পছন্দ করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহ যখন কেনো সম্প্রদায়কে ভালোবাসেন তাদেরকে বিপদের মাধ্যমে পরিক্ষা করেন। যে লোক তাতে (বিপদে) সন্তুষ্ট থাকে, তার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি বিদ্যমান। আর যে লোক তাতে (বিপদে) অসন্তুষ্ট থাকে, তার জন্য আল্লাহর অসন্তুষ্টি বিদ্যমান। (সুনানে তিরমিজি, হাদিসঃ ২৩৯৬)
৬. বিনয়ী ব্যক্তিঃ
যার আচার আচারণ, কথা ও কাজে বিনয় প্রকাশ পায়। মূলত সে আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকে এবং পরকলের চিন্তা তাকে অহংকার ও দম্ভ প্রকাশ করতে দেয় না। বিনয়ী ব্যক্তিদেরকে আল্লাহ মাফ করে দিবেন।
৭. রোজাদার বা সিয়াম পালণকারী ব্যক্তিঃ
যে আল্লাহর সন্তুষ্ঠির জন্য তার নির্দেশ মতো নিধারিত সময় পর্যন্ত পানাহার পরিহার করে চলে অথ্যাৎ (রোজা/সিয়াম) পালন করে কিয়ামত দিবসে মহান আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে নিজ হাতে প্রতিদান দিবেন। তাছাড়া রোজা মানুষের পাপ থেকে বিরত রাখে, তার মাধ্যমে আত্নানিয়ন্ত্রণ ও আল্লাহ ভীতি অর্জিত হয়। রোজার প্রতিদান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাত।
৮.দানশীল ব্যক্তিঃ
অসহায় মানুষের জন্য যার অন্তর বিগলিত এবং যে তাদের প্রতি অনুগ্রহশীল। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য সে তার সম্পদ ব্যয় করতে কুণ্ঠাবোধ করে না। মহান আল্লাহ তা’আলা দানশীল ব্যক্তিদেরকে পছন্দ করেন।
৯. আল্লাহকে স্মরণকারীঃ
যে আল্লাহর স্বরণ ও ভলোবাসা দ্বারা নিজের অন্তর সজীব রাখে। আল্লাহর ইবাদত, জিকির, তেলাওয়াত, তাসবিহ, পাঠে সর্বদায় নিজেকে মসগুল রাখে মহান আল্লাহ তাদেরকে অধিক পরিমানে ভালোবাসেন।
১০. লজ্জাস্থান হেফাজতকারীঃ
যারা অন্যায় ও অবৈধ পন্থায় নিজের জৈবিক চাহিদা পূণ করে না এবং যাদের দেহভঙ্গিতেও অশালিন প্রকাশ পায় না। আল্লাহতালা বলেন, ‘যার নিজেদের যৌনাঙ্গ সংযত রাখে, তবে তাদের অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া, এতে তারা নিন্দীয় হবে না। কেউ এদের ছাড়া অন্যদের কামনা করলে তারা হবে সীমালঙ্ঘনকারী। (সুরাঃ মুমিনুন, আয়াতঃ ৫-৭)
পরিশেষে বলা যায় যে, উপরোক্ত গুণসমূহ যেসকল ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে মহান আল্লাহ তা’আলা তাদের প্রতি রহম করবেন ও তাদেরকে মাফ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ।