Islamic Zone

islamic zone

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও শারীরিক অঙ্গবিকৃতি সর্ম্পকে ইসলামে কি বলে?

1 min read
শারীরিক অঙ্গবিকৃতি, ট্রান্সজেন্ডার, রূপান্তরিত লিঙ্গ

শারীরিক অঙ্গবিকৃতি

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ও শারীরিক অঙ্গবিকৃতি সর্ম্পকে ইসলামে কি বলে ?

বর্তমান আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু শরিফ , শরিফা। যেখানে ট্রান্সজেন্ডার বা অঙ্গবিকৃতি কে হিজরার সাথে তুলনা করা হচ্ছে। তাই এই বিষয়টি নিয়ে একটি দ্বিধা-দ্বন্দ কাজ করে ট্রান্সজেন্ডার বা অঙ্গবিকৃতি কি এবং হিজরা বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ কি? এরা কি? একই নাকি আলাদা।

এই বিষয়েে একটু বিস্তারিত বলে বোঝা যায় জন্মগত ভাবে বা কোন দূরঘটনার স্বীকার হয়ে কেউ শরীরের কোন অঙ্গ হারালে তাকে প্রতিবন্ধী বলে থাকি। এত কেউ মানসিক কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। হিজরা জন্ম গত ভাবেই তৃতীয় লিঙ্গের হয়ে থাকে। তবে ট্রান্সজেন্ডার বা অঙ্গবিকৃতি বিষয়টা এমন নয়।  লিঙ্গ পরিবর্তনকারী বা রুপান্তরকারী বলা হয় ওই সকল ব্যক্তিদেরকে যাদের মানসিক লিঙ্গবোধ জন্মগত লিঙ্গচিন্হ থেকে ভিন্ন। লিঙ্গ রুপান্তকারী কোন ব্যক্তি যদি তাদের লিঙ্গ পরিবর্তনের জন্য ডাক্তারের সাহায্যে কামনা করে তখন তাদেরকে রুপান্তকারী নামেও ডাকা হয়ে থাকে। ইসলামিক দৃষ্টিতে ট্রান্সজেন্ডার একটি মারাক্তক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডার এমন নারী-পুরুষ যারা মহান আল্লাহ তাআলার সৃষ্টিতে সন্তুষ্ট না হয়ে তাদের জন্মগত লিঙ্গ পরিবর্তন করে নারী থেকে পুরুষ ও পুরুষ থেকে নারীরুপ গ্রহণ করার চেষ্টা করে। অথচ মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সুন্দর আকৃতিতে।

শারীরিক অঙ্গবিকৃতি সর্ম্পকে ইসলাম কি বলে চলুন আমরা জানি,

ট্রান্সজেন্ডার বা শারীরিক অঙ্গবিকৃতি সর্ম্পকে ইসলামের দৃষ্টিকোণ হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) ওই সকল ব্যক্তিদের ‍উপর লানত করেছেন যেসকল মহিলা কৃত্রিম চুল বানায় এবং কৃত্রিম চুল ব্যবহার করে, উল্কি আঁকে এবং আঁকায়, ভ্রু উপড়ায় এবং নিজেকে সুন্দর করার অভিলাষে আল্লাহ তাআলার সৃষ্ট আকৃতির পরিবর্তন ঘটায়। (তিরমিজি, হাদিস নং : ২৭৮২)

মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, অবশ্যই আমি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, অবশ্যই তাদের অন্তরের মধ্যে মিথ্যা বাসনা সৃষ্টি করব, ফলে তারা পশুর কান ছিদ্র করবে। এবং আমি তাদেরকে নির্দেশ দেব ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করবে। আর আল্লাহর পরিবর্তে কেউ শয়তানকে অবিভাবকরুপে গ্রহণ করলে, সে সুষ্পষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়। (সুরাঃ আন নিসা, আয়াত নং: ১১৯)

মিথ্যা বাসনা এমন এক আখাঙ্খা যা মানুষের অন্তরে শয়তানের কুমন্ত্রণা ও তার হস্তক্ষেপ দ্বারা সৃষ্টি হয় এবং মানুষের পথভ্রষ্ট করার কারণ হয়।

আল্লাহর সৃষ্টিকে অপ্রিয় গণ্য করার পরিণতিঃ

মহান আল্লাহ তাআলা পুরুষ-নারী উভয় ই সৃষ্টি করেছেন। তিনি যাকে ইচ্ছা পুরুষরুপে সৃষ্টি করেছেন এবং যাকে ইচ্ছা নারীরুপে সৃষ্টি করেছেন। এক্ষেত্রে মহান আল্লাহ তাআলার ফয়সালা চূরান্ত। এখানে মানুষের কোন ইচ্ছা-অনিচ্ছা নেই। মহান আল্লাহ তাআলা যে ফয়সালা করেছেন সেটায় আমাদের মেনে নিতে হবে।

আর যারা আল্লাহর সিদ্ধান্ত কে অমান্য করবে এবং আল্লাহর সৃষ্টিকে অপ্রিয় হিসেবে গণ্য করবে তাদের সর্ম্পকে মহান আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেছেন,  তখন তাদের দশা কেমন হবে যখন ফেরেস্তারা তাদের মুখে আর পিঠে মারতে মারতে তাদের জান বের করা হবে। এর কারণ এজন্য যে, তারা তারই অনুসরণ করে যা আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে দেয়। আর আল্লাহর সন্তুষ্টিকে অপ্রিয় হিসেবে গণ্য করে। (সুরাঃ মুহাম্মদ, আয়াত নং: ২৭-২৮)

মহান আল্লাহ তাআলা পুরুষকে পুরুশালীরুপে স্বভাবে বানিয়েছেন এবং নারীকে দিয়েছেন নারীত্ব এবং তা ধরে রাখা আল্লাহর বিধান। আল্লাহর এই বিধান পরিবর্তনকারী নারী-পুরুষদের উপর আল্লাহ রাসুলের অভিশাপ ও লানত রয়েছে।

সুতরাং আল্লাহর বিধান এবং আল্লাহর সিন্ধান্তের উপর সন্তুষ্টি থাকা প্রত্যেক মুমিন ও মুসলিমদের মান্য করা আবশ্যক।

যদি কোন ব্যক্তি শারীরিক অঙ্গবিকৃতি  ঘটায় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উপর অটুট না থাকে তার জন্য রয়েছে ভয়াবহ আজাব। এবং এই সকল ব্যক্তিরা দুনিয়াতে থাকাকালীন অবস্থায় বিভিন্নভাবে লাঞ্জিত হবে।

অন্যদিকে যেসকল আল্লাহর যে সকল বান্দারা শারীরিক অঙ্গবিকৃতি  ঘটায় না এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির উপর অটুট থাকে। নিজেকে আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করে তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে রয়েছে কল্যাণ।

সমাজ বিজ্ঞানের মতে. ট্রান্সজেন্ডার বা অঙ্গবিকৃতি ফলে সমজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে, এই পরিবর্তনের ফলে বংশ গতি থেমে যাবে, শারিরীক সক্ষমত হারাবে এমন কি অল্পতে বার্ধ্যকে উপনিত হবে, দেশে এই পরিবর্তনের বেড়ে গেলে কর্মক্ষম মানুষ কমে যাবে এবং অর্থনীতির উপর তা প্রভাব ফেলবে ইত্যাদি।

পরিশেষে বলা যায়, মহান আল্লাহ তাআলা মানুষকে যেরূপ দেহের আকৃতি দিয়েছেন, সেটাই তার জন্য উৎকৃষ্ট নিয়ামত। পুরুষদের জন্য পুরুশালী ধরে রাখা এবং নারীদের জন্য নারীত্ব ধরে রাখা আল্লাহর বিধান। তাই কোনভাবে অস্ত্রপাচার বা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে লিঙ্গ পরিবর্তন করে আল্লাহ তাআলার সৃষ্টিকে বিকৃত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নই।

তাই আসুন, আমরা শারীরিক অঙ্গবিকৃতি সর্ম্পকে সচেতন হয় এবং এর থেকে বিরত থাকি। এবং আল্লাহর সৃষ্টির উপর সন্তুষ্টির থাকি ও ইসলামের বিধানসমূহ পালন করার চেষ্টা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Copyright ©2024 All rights reserved | www.islamiczone.org | Develop by www.kictbd.com | Newsphere by AF themes.