সালাম দেওয়া-নেওয়া ক্ষেত্রে যেসকল ভুল পরিলক্ষিত।
1 min readসালাম দেওয়া হয় শান্তির লক্ষ্যে তবে যদি তা হয় ভুল উপায়ে।
সালাম দেওয়া-নেওয়া বা সালাম বিনিময় ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একজন মুসলিমের জন্য ওপর মুসলিম এর যে ছয়টি হক রয়েছে তার মধ্যে সালাম বিনিময় অন্যতম। সালাম আরবি শব্দ যার অর্থ হলো- শান্তি, প্রশান্তি, কল্যাণ, দোয়া, আরাম, আনন্দ। এক মুসলমান ওপর মুসলমানের সালাম দেওয়া যেমন সুন্নত, ঠিক তেমনি উচ্চস্বরে সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে এক অপরের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.) সমাজে সালাম বিনিময়ের জন্য সকল মুসলিম ভাইদের নির্দেশ দিয়েছেন। তবে সালাম দেওয়া-নেওয়া বা সালাম বিনিময়ে বেশ কিছু ভুল পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। যেগুলো সালামের মাধুর্যতা নষ্ট করে। সালাম দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রচলিত ভুলসমূহ নিচে দেওয়া হলো।
১. সালাম শুনেও উত্তর না দেওয়া:
অনেক সময় দেখা যায় যে, অনেকের অপছন্দনীয় ব্যক্তি তাকে সালাম দিলে সে সালামের উত্তর দেয় না। অথচ সালামের উত্তর দেওয়া ওয়াজিব। এটি সকলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ধনী-গরিব, শত্রু-মিত্রসহ সকলের জন্য সালাম শুনে উত্তর দেওয়া আবশ্যক ও উত্তম।
২. সালাম পাওয়ার আকাঙ্খা করা:
সমাজে বয়সে বড় এমন অনেক ব্যক্তিরা মনে করেন যে শুধুমাত্র তারাই আগে সালাম পাবে। এজন্য তারা অন্যের কাছ থেকে সালাম পাওয়ার জন্য আকাঙ্খা বা অপেক্ষা করে থাকে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ এটি ভুল ধারণা। ইসলামের শিক্ষা হলো যেকোন বয়সের ব্যক্তি একে-অপরের আগে সালাম দিয়ে মর্যাদা লাভের চেষ্টা করবে।
৩. সালামের উত্তর দিয়ে আবার সালাম প্রদান করা:
সালাম দেওয়া-নেওয়া বা সালাম বিনিময়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভুল সালামের উত্তর দিয়ে আবার সালাম প্রদান করা। কিন্তু উত্তম হলো অন্যকে আগে সালাম দেওয়া। কেউ যদি আগে সালাম দিয়ে থাকেন তাহলে শুধুমাত্র সালামের উত্তর দেওয়ায় উত্তম। সালামের উত্তর প্রদান করে আবার সালাম দেওয়া গ্রহনযোগ্য নয়।
৪.সালামের উত্তর না দিয়ে আবার সালাম প্রদান করা:
সালাম পাওয়ার পর সালামের উত্তর না দিয়ে আবার সালাম দেওয়া প্রচলিত ভুলগুলোর মধ্যে একটি। যখন বড়রা সালাম দেয় তখন অনেকে সালামের উত্তর না দিয়ে আবার সালাম দিয়ে থাকেন। অথচ সালাম পাওয়ার পর আগে সালামের উত্তর দেওয়ায় ওয়াজিব।
৫. অসময়ে সালাম দেওয়া:
অনেক সময় দেখা যায় যে, এমন অনেক ব্যক্তি আছে যারা অসময়ে সালাম প্রদান করে থাকে। কিন্তু অসময়ে সালাম প্রদান করা ইসলামে নিষেধ রয়েছে। অনেক ব্যক্তিবর্গ আছে যারা মোনাজাত ও খাবার খাওয়ার সময়ে সালাম দিয়ে থাকেন। কিন্তু ওই সময়ে সালাম না দেওয়ায় উত্তম।
৬. ভুল বাক্য উচ্চারণে সালাম প্রদান করা:
সালাম প্রদানের ক্ষেত্রে প্রচলিত সবচেয়ে বড় ভুল হলো সালাম প্রদানের সময় ভুল বাক্য উচ্চারণ করা। সালামে ভুল বাক্য উচ্চারণে সালামের অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়। এটি একটি বড় ধরণের ভুল। সুতরাং সঠিক উচ্চারণে সালাম প্রদান করা ওয়াজিব ও উত্তম।
৭. সালামের জবাব না পাওয়ায়, সালাম দিয়েছি বলা:
আমরা সালাম বিনিময়ের সময় যে ব্যক্তি কে উদ্দেশ্য করে সালাম দিয়ে থাকি কিন্তু সে অন্য দিকে মনোযোগ থাকায় কিংবা না শুনায় সালামের জবাব দেয় না। এক্ষেত্রে আমরা তাকে উদ্দেশ্য করে বলি আপনাকে সালাম দিয়েছি। এই কথা টা বলা সালাম বিনিময়ের ক্ষেত্রে ভুল বলে বিবেচিত হয়। সমাজে এই রীতি প্রচলিত আছে। এমন অবস্থায় করনীয় পুনঃরায় সালাম দেওয়া।
৮. নিচুস্বরে সালামের জবাব দেওয়া:
এক মুসলমান ওপর মুসলমানের সালাম দেওয়া যেমন সুন্নত, ঠিক তেমনি উচ্চস্বরে সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। তাই কেউ সালাম দিলে যথাযথ সম্মানের সাথে উচ্চস্বরে সালামের জবাব দিতে হবে।